Tuesday, February 24, 2009

জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলন নিয়া আরও কিছু কথা

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:০৪
শেয়ার করুন: [Add to digg] [Add to FURL] [Add to blinklist] [Add to reddit] [Add to Technorati] [Add to YahooMyWeb] [Add to Co.mments] [Add to NewsVine] Facebook [new feature]

জাবির আন্দোলন নিয়া প্রথম লেখাটা লেখছিলাম ৩০ জুলাই। (Click This Link)। আন্দোলন একটা মোড় নিছিল সেই সময়। ছানোয়ার হোসেনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন আমি প্রথম দিন থেকেই পর্যবেক্ষণ করতেছি। পরশু পর্যন্ত আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, আন্দোলন মিনিমাম জয় অর্জন করবে। কিন্তু কাল সকালে পত্রিকা হাতে নিয়া হতাশ হয়া গেলাম। এখন জাহাঙ্গীরনগর থেকে ম্যাক্সিমাম দূরত্ব রাইখা চলি। সো, পুরা ফিচারটা আমার কাছে ক্লিয়ার নয়। বিশেষ কইরা ইন্টারনাল ম্যাকানিজম। সেইটা পরিস্থিতির ভিতরে না থাকলে কোনোভাবে বুঝা সম্ভবও না। রায়হানদার একটা পোস্টে আলামত পাইছিলাম যে, সানীর সাপোর্টে শক্তিশালী কোনো পক্ষ আছে। (Click This Link)। কিন্তু এইভাবে ছাড়া পেয়ে যাবে সেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হইতেছিল। কালকে থেকে আজকে বেশ কয়েকটা পোস্ট পড়লাম সামহয়ারইনে। কাল শুরু করছিলেন অন্যমনস্ক শরৎ আজকে লাস্ট পড়লাম নুশেরার পোস্ট। একজন বাদে সবাই আন্দোলনে সমর্থন দিছেন। জাবি প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছেন। শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন। তাদের কর্তব্যে অটল থাকতে বলেছেন। আমার মতে, সামহয়ার থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যে সাপোর্ট পাইলো এইটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলনের শুরু থেকেই সাপোর্ট দিয়েছেন ব্লগাররা। পরশু সিন্ডিকেট বসার দিনে আনু মুহাম্মাদ প্রথম আলোতে কলাম লিখছেন। বিভিন্ন মিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে। এর আগে আন্দোলনকারীরা যখন অনশন পালন করতে গিয়া জীবন বিপন্ন করছিলেন তখন দেশের বিখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরা বিবৃতি দিছেন। তারা সশরীরে জাবিতে গিয়ে সংহতি জানাইছেন। এবং তাদের সামনেই ভিসি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি পত্রপত্রিকায় আন্দোলনের সমর্থনে প্রচুর লেখা পড়ছি। ফেসবুকে গ্রুপ হইছে একাধিক। প্রাক্তন ছাত্ররা সংহতি জানাইছেন একাধিকবার। গত ২ আগস্ট অনেকে গিয়া সমর্থন জানায়ে আসছেন।
অর্থাৎ আমাদের সমাজের বহু অংশের সক্রিয় সমর্থন সত্ত্বেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ সিন্ডিকেট একটা অন্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এইখানে বলে রাখি, সিন্ডিকেট কোনো বিচারালয় না। নানা সুবিধাভোগী, আমলা, শিক্ষক রাজনীতির টাউটরা এইখানে বসেন। তাদের মূলকাজই হইলো, চুরি-চামারি, ডাকাতি ইত্যাদির ভাগবাটোয়ারাকে বৈধতা দেওয়া। ফলে, সিন্ডিকেটগুলা প্রচণ্ড চাপে না থাকলে আন্দোলনের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। এখন প্রশ্ন হইলো, আমাদের সব চাপ সত্ত্বেও কেন জাবি কর্তৃপক্ষ বা সিন্ডিকেট কেন আন্দোলনের দাবির প্রতি মিনিমাম শ্রদ্ধা দেখাইলো না? কারণটা যদি বলি, তাইলে নির্মম শোনাইতে পারে। কিন্তু সেইটাই সত্য। সেটা হইলো, রাস্তার আন্দোলন ততোটা শক্তিশালী ছিল না। ফলে, ভার্চুয়াল বা কাগুজে সমর্থন কোনো কাজে আসে নাই।
আন্দোলন শুরু করছে, নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। জাবির ইতিহাসে নাট্যতত্ত্বে কোনো শিক্ষার্থীর আন্দোলনে আসাই একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। তারা যখন তাদের বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করছে তখন সেইটার গুরুত্ব ভয়াবহ। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগরে আন্দোলনের ঐতিহ্যবাহী শক্তিগুলা এইটা বুঝতে সময় ক্ষেপন করছে। ফলে, আন্দোলন জমাট বাঁধতে অনেক সময় লাগছে। দীর্ঘায়িত আন্দোলন চালায়ে নেওয়ার মতো কঠিন কাজ আর নাই। সময় যত দীর্ঘায়িত হইছে ততোই দুর্বল হইছে। সব কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরও প্রশাসনের ওপর চূড়ান্ত চাপ দেওয়া সম্ভব হয় নাই।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত সংখ্যায় রাস্তায় নামে নাই। এর মূল কারণ আর কিছু না। ক্যাম্পাসের ভিতরে খুব একটা মুভ করা হয় নাই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা পত্রিকা পইড়া বা ব্লগ পইড়া আন্দোলনে আসে না। তারা বন্ধু-বন্ধু যোগাযোগের ভিত্তিতে আসে। সেইরকম কার্যকর মুভ হয় নাই।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখলাম, তাদের একটা বড় অংশ বাইরে মানে ঢাকায় মুভ করতে সময় ব্যয় বেশি করছেন।
যাই হউক, আন্দোলনের প্রথম পর্বটা ব্যর্থ হইছে। কিন্তু তৎক্ষণাৎ আন্দোলনের পক্ষ থেকে সানীকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্তটা ভাল হইছে। সামাজিক বয়কটের ঘোষণা থেকে নতুন করে মুভ করা সম্ভব হইতে পারে। তার জন্য ঢাকায় মুভ করলে বা মিটিং করলে কোনো কাম হবে না। এইগুলা কোনো ফল দেয় না। স্পটে গিয়া ছাত্রদের বুঝায়ে মিছিলে আনতে হবে।
কিশোরকে নির্মমভাবে আহত করা হইছে। সংবাদপত্রের নিউজ থকে যা বুঝলাম, হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায় নাই। জাবিতে যে আন্দোলনকারীরা থাকেন, তাদের মনে রাখতে হবে, সানীর বাড়ি সাভার-ধামরাই এলাকায়। এলাকার গুণ্ডা-পাণ্ডাদের কাজে লাগিয়ে সে ক্যাম্পাসে ঢুকার চেষ্টা করবে। সে কড়া আওয়ামী লীগার হইলেও, আগে ছাত্রদলের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল বইলা শুনছি। এবারও ছাত্রদল তার কাছ থেকে টাকা খাইছে, বইলা ক্যাম্পাসে গুজব আছে। সো, নতুন আন্দোলন দানা বাঁধার আগে আন্দোলনকারীদের সাবধান থাকতে হবে। একা চলা যাবে না। ক্যাম্পাসের ভিতরে বাইরে দল বেঁধে চলা ফিরা করতে হবে।
আরেকটা আশঙ্কা হইলো, কর্তৃপক্ষ ও সানী চাইবে তার ওপর এখন আন্দোলনাকারীরা শারীরিক হামলা করুক। যার ভিত্তিতে তারা মামলা, শোকজ, বহিষ্কার ইত্যাদি করতে পারে। আমি শারীরিক আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলবো। নাজুক সময়টা অতিক্রম করতে পারলেই, সব ঠিক হয়া যাবে।
আশাটাই মূল কথা।



প্রকাশ করা হয়েছে: পঞ্চতন্ত্র বিভাগে ।



* ৩২ টি মন্তব্য
* ৪০২ বার পঠিত,

Send to your friend Print
রেটিং দিতে লগ ইন করুন
পোস্টটি ১৭ জনের ভাল লেগেছে, ৫ জনের ভাল লাগেনি


এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন

আপনার নিজস্ব ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন

আপনার নাম :

আপনার ই-মেইল

আপনার বন্ধুদের ইমেইল

মেসেজ (নীচের মেসেজটি আপনার ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন
hi, i have been reading a nice wonderful post in http://www.somewhereinblog.net and would like to share it with you. Here is the post link http://www.somewhereinblog.net/blog/mahbubmoreblog/28843472 , please visit the link and rate it if you like. :-)

নিজেকেও একটি কপি পাঠান



১. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:১৮
comment by: যীশূ বলেছেন: ভালো নির্দেশনা, পছন্দ হইছে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৫৪

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
২. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৮
comment by: মেহরাব শাহরিয়ার বলেছেন: ভালো , দুইজন মাইনাস দিয়ে গেছে অলরেডি ।
সানী টাইপের লোকেরা ব্লগেও বেশ আছে !!!
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৫৬

লেখক বলেছেন: এই দুইজন সানী টাইপ নাও হইতে পারে। আমার জানি দুশমন হইলেও হইতে পারে।
আমার পোস্ট দেখলে অনলাইনে যে কয়জনই থাকে দুশমন, আইসা মাইনাস দিয়া যায়।
ব্যাপার না।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৩. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:০৯
comment by: ত্রিভুজ বলেছেন: +++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৮

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
৪. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৫
comment by: রাজপথ_থেকে_বলছি বলেছেন:

এই মন্তব্যটি মুছে ফেলা হয়েছে, মন্তব্য করার সময় ব্লগ ব্যবহারের শর্তাবলীর দিকে খেয়াল রাখুন । শর্তাবলী

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৯

লেখক বলেছেন: মানে কী?
আপনে আমার লেখা পড়ছেন?
আপনার গালিটা রাখলাম, যেন কর্তৃপক্ষ এইটা দেখে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
৫. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:০৪
comment by: রেডিও বাংলাদেশ বেতার বলেছেন: + পছন্দ হইছে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:২০

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
৬. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:২১
comment by: খোমেনী ইহসান বলেছেন: পছন্দ হইছে। কিন্তু আমি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক আন্দোলনে দেখেছি ছাত্ররা আগেপিছে না ভেবে তারুণ্যের বলে একটা নৈরাজ্য তৈরি করলেই ফল পায়। এ ছাড়া ছুড ছুড পোলাপাইনরে ঠান্ডা যুদ্ধের কিম্বা গেরিলা যুদ্ধের ভুগোল পড়ানো হইলেই যতো বিপত্থি ঘটে। এতো ভাবলে আন্দোলন হয় না। ডায়লগ করা যায় বড়জোর। এদেশে আওয়ামী লীগ স্টাইলটাই সবচেয়ে যথার্থ। এতো দিনের মধ্যে দাবি মানো না হলে কপাল খারপ করে দেয়াটাই ভালো রণকৌশল। ভাল থাকুন।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:২৩

লেখক বলেছেন: এইটা একটা খাঁটি কথা বলছেন।
৭. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:২২
comment by: মাহবুব সুমন বলেছেন: ভালো স্ট্রেটেজি, পছন্দ হয়েছে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৫

লেখক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৮. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:২৩
comment by: অন্যমনস্ক শরৎ বলেছেন: প্রতিবাদের জন্য ধন্যবাদ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৭

লেখক বলেছেন: আজকের মিটিংয়ে যাইতে পারবো না। আমার পয়েন্টগুলা মূলত আপনার উদ্দেশেই। মাথায় রাখার অনুরোধ রইলো।
৯. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪০
comment by: অন্যমনস্ক শরৎ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আমি মাথায় রাখছি। এই মুহুর্তে আন্দোলনকে ভায়োলেন্ট করার একটা পাঁয়তারা চলছে যা আন্দোলনকে সমূলে উৎপাটনের রাস্তার দিকে ধাবিত করতে চাইছে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:২০

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস এ লট।
১০. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪
comment by: ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: ‌রাস্তার আন্দোলন ততটা শক্তিশালী ছিল না' আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আমরা যারা এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলাম তারা জানি সমস্যা রাস্তার আন্দোলনের জমায়েতে নয়, থাকলে রয়েছে কৌশলে। যেমন আজ থেকে এক মাস কি পনের দিন আগেই একটা মরি কি মারি অবস্থা তৈরি করা দরকার ছিল। দ্বিতীয়ত, সানিকে রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান শিক্ষকদের সকল গ্রুপ যে মহান কাকীয় জোট বেঁধেছেন, তা অভূতপূর্ব। এর থেকে কম চাপে মোস্তফা ও তানভীরের অপসারণ হয়েছে। সুতরাং মাহবুব যে আন্দোলনকারীদের দিকে সমালোচনার আঙুল তুললেন, তা মনে হয় একটু ট্যারা পথে শিক্ষক সমিতির দিকে না গিয়ে ছাত্র সমিতির (নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর) বিরুদ্ধে গিয়েছে।

এরপর বলেছেন,‌ ‌''সাধারণ শিক্ষার্থীরা পত্রিকা পইড়া বা ব্লগ পইড়া আন্দোলনে আসে না। তারা বন্ধু-বন্ধু যোগাযোগের ভিত্তিতে আসে। সেইরকম কার্যকর মুভ হয় নাই। আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখলাম, তাদের একটা বড় অংশ বাইরে মানে ঢাকায় মুভ করতে সময় ব্যয় বেশি করছেন।''

আগের থেকে জাবির বেশি শিক্ষার্থী এখন ঢাকা ভিত্তিক। ফলে তাদের একাংশকে ঢাকায় দেখা যাওয়া কোনো মন্দ ঘটনা না। কার্যত আপনি হয়তো ২/৩ জনকে দেখেছেন। তারা মাঝে মাঝেই আসতো আন্দোলনের তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রাক্তনদের দোরে দোরে ঘুরতে, প্ত্রিকা অফিসে তদ্বির করা সহ ইত্যাকার কাজে। ক্যাম্পাসে যথেষ্ঠ কাজ হয় নি তা নয়। তা নইলে অনেক উত্থানপতনের পরও চারমাস একটি আন্দোলন বারবার ৪/৫শ লোকের মহড়া দিয়ে চলতে পারতো না।

তৃতীয় সমস্যা, নাট্যতত্ত্বের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অণ্যদের মিথষ্ক্রিয়া। এখানে সত্যিই সমস্যা ছিল। কিন্তু তারাই কিন্ত ছিল আন্দোলনের স্থায়ি শক্তি। তাদের কারণে বড় সমস্যা হয়েছে তা মনে হয় না। যেটা হয়েছে, নের্তৃত্ব আরো সুপরিকল্পিত ও দৃঢ় চাল না দিতে পারার জন্য।
যাহোক, অন্য একজনের জবাবে আমি এটুকু লিখেছিলাম, নিজে তাও দিয়ে দিলাম প্রাসঙ্গকিতার খাতিরে।


খোমেনী, এই চারমাসে জাবির ছেলেমেয়েদের আসলেই পাহাড় ডিঙাতে হয়েছে। চার মাস আগে জরুরি অবস্থা এখনকার মতো ঢিলা ছিল না, জাবির পাশে সেনাক্যাম্পও ছিল। তারা যখন তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে যেত। সেঅবস্থায় ওরা আন্দোলন করেছে, ভিসিকে ঘেরাও করেছে, অনশন করেছে ধর্মঘট করেছে। ওরা তখন রাষ্ট্রের বলপ্রয়োগের খাসলত উস্কানি না পায়, সে বিষয়ে সতর্ক ছিল। আপনিই তো অন্যত্র বলেছিলেন যে, বলপ্রয়োগকে নৈতিক ভাবে জনগণের সামনে উচ্চে থাকতে হবে। চারমাস কেন এক মাস আগেও সবার কাছে প্রতিষ্ঠিত ছিল না যে, সানি অপকর্মগুলো করায় ওস্তাদ। তারপরে তাদের লেগে থাকায় বিষয়টা জাতীয় ইস্যু হয়েছে, আজ শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকেও নীতিমালার প্রতিশ্রুতি এসেছে। হতে পারে সেই নীতিমালা আর আমাদের চাওয়া নীতিমালা এক নাও হতে পারে। কিন্তু স্বীকৃতি আদায় করায় কাজটা এখন আগের থেকে সহজ হলো। এখন কোনো মেয়ের গায়ে হাত দেয়া, তাকে অস্লীল ইঙ্গিত করা জাতীয় ইত্যাকার পুরুষালি চোখে মেনে নেয়ার মতো কাজও যে নীপিড়ন সেই স্বীকৃতিটা তো এলো। এটাই আপনার সেই নৈতিক উচ্চতা অর্জন। জাবির ছেলেমেয়েরা এই অর্জন সমাধা করেছে।

দ্বিতীয় পরিস্থিতিটা বুঝতে জাবির ভেতরের অবস্থা জানা চাই। শিক্ষকদের সকল গ্রুপই প্রায় একাট্টা তাদের শিক্ষকসুলভ ও পুরুষসুলভ অধিকার (টুকটাক নিপীড়ন) রক্ষায় একাট্টা। তার থেকেও বড় হয়ে উঠেছে ভিসি-অ্যান্টি ভিসি সমীকরণ। সবাই-ই চাইছে আন্দোলন যেন ভিসি বিরোধী হয়, মারামারি হয়, তাতে তাদের গ্রুপ ক্ষমতায় আসতে পারে। শিক্ষার্থীরা কাবু হয়েছে এই জায়গায়। পুরুষালী আর দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক ক্ষমতার জবাবে পাল্টা ক্ষমতাপ্রয়োগের সময় যখন এল, তখন তারা তা করতে দ্বিধা করলো। অর্থাৎ সিন্ডিকেটের রায় ঘোষণার পরপরই তাদের উচিত ছিল, সবকিছু বন্ধ করে দেয়া। সেটা হতো মন্দের ভাল। কেননা, তারপরে যে পুলিশি জুলুম হতো, তা এখনকার মাস্তানি জুলুমের থেকে ভাল। আর তখন তা জাতীয় স্তরে জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে সবার সামনে হাজির হতো। ওদের কাজ ছিল ওটাকে জাতির দরবারে পেশ করা। এখন বাকি কাজ আমার-আপনার। ওদের দোষারোপ না করে আসুন না, সেই কাজটাই করি।

আপনার নীতিমালা বিষয়ে এখানে আর আলাদা করে বলতে পারছি না সময়াভাবে। নীতিমালা একটা মধ্যবিত্তিয় নরম দাবি। কিন্তু এটা পাওয়া গেলে অচিরেই তা গার্মেন্টেও প্রয়োগ করা সম্ভব হবে। আর গার্মেন্টের মালিকি দানবীয়তা আর শ্রমিকের আগুনে উত্তেজনায় সেটা আর নরম থাকবে না, হবে বিপ্লবী দৃষ্টিভঙ্গির সূচনাকারি এবং নারীত্বের অস্ত্র। নীতিমালা একটা স্কেল। স্কেল না থাকলে আপনি মাপবেন কী করে? তখন এটা যে অপরাধ, তা বলবার জন্য আর আন্দোলন করতে হবে না, অপরাধের সুষ্ঠু বিচারের জন্যই কেবল চাপের দরকার হতে পারে। এটার অ্যাবিউজ হতে পারে, সেটা নির্ভর করবে প্রতিবাদীরা কতটা সোচ্চার থাকবে তার ওপর। সুতরাং সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিরোধের বিকল্প নাই।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:২২

লেখক বলেছেন: ফারুক ভাইয়ের পয়েন্টগুলার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার কিছু দেখছি না।
সমালোচনা-আত্মসমালোচনার চাইতে বড় কথা এখন নতুন করে আন্দোলনকে দাঁড় করানো।
ধন্যবাদ আপনাকে।
১১. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৩৬
comment by: ফাহমিদুল হক বলেছেন: "সিন্ডিকেট কোনো বিচারালয় না। নানা সুবিধাভোগী, আমলা, শিক্ষক রাজনীতির টাউটরা এইখানে বসেন। তাদের মূলকাজই হইলো, চুরি-চামারি, ডাকাতি ইত্যাদির ভাগবাটোয়ারাকে বৈধতা দেওয়া।"

হক কথা।

এতদূর এগিয়ে এই ফলাফল সত্যিই হতাশাজনক। নিপীড়ক এবার বলীয়ান হয়ে উঠেছে, পাল্টা হামলা দিচ্ছে।

একালের ছোট ছোট ছাত্র-আন্দোলনগুলো যে সাফল্যের রীতি গড়ে তুলছিল, এই ব্যর্থতা এধরনের আন্দোলনকে পুনর্মূল্যায়ন করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:২৪

লেখক বলেছেন: ফাহমিদ ভাই,
মূল্যায়ন-পুনর্মূল্যায়নের প্রক্রিয়া তো চলতেই থাকে। কিন্তু বর্তমান বিশেষ পরিস্থিতিতে সাময়িক ব্যর্থতার দায়ে অতীতের সাফল্যকে কি আমরা ম্লান করে গ্রহণ করবো?
এই পরিস্থিতিটা বিশেষ। সব ভেরিএবল যথার্থভাবে রিঅ্যাক্ট করতেছে না।
১২. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৩৯
comment by: অন্যমনস্ক শরৎ বলেছেন: ফাহ: এই পুনর্মূল্যায়ন করার ঈঙ্গিতকে নিপীড়ক ব্যবস্থা আর তার বাহিনী কিভাবে ব্যবহার করবে তা বোধহয় সহজেই অনুমান করা যায়। ফলে বিষয়টাকে মাথায় রেখেই দেশে বিদেশে যোগাযোগের এবং প্রতিরোধের রাস্তাটা তৈরী করা দরকার।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:৪৬

লেখক বলেছেন: এবং কথা বলাটা জরুরি।
১৩. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৫০
comment by: হাসিব মাহমুদ বলেছেন: আমি একটা জিনিস বুজতেছি না । আন্দোলন চল্তেছে ১০বছর হৈলো । আমি যখন ইনভার্সিটির ছাত্র আছিলাম তখন আমাগো ঐ নীতিমালার খসড়া বানানিটাই হৈছিলো । হেরা সেইটা নিছিলো আর তার্পর সেইটা ডাস্টবিনে ফালায় দিছিলো । কিন্তুক এখন দেখতেছি ঘটনা আরো অনেগ্দুর আগাইছে । কি কি ও কোন দিকে আগাইছে সেইটা ফারুক ওয়াসিফ বলছে । এই অগ্রগতী সত্ত্বেও এই আন্দোলনটারে ব্যর্থ তকমা লাগানির কারনটা কি ? আন্দোলন কি তাইলে চলমান প্রসেস না ? নাকি এইসব আন্দোলনরে আমরা সিজন বেসিসে ধরবো আর প্রত্যেক সিজনে ফাইনাল সেমিফাইনাল কিছু একটা আশা করবো ?
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:৪৯

লেখক বলেছেন: আন্দোলন চলমান প্রসেস তো বটেই। কিন্তু এই চলমানতার মধ্যে উত্থান-পতন থাকে। নতুন ইস্যু আসে। সেই ইস্যুতে চলমান প্রসেস নতুন গতি পায়। এবং প্রত্যেকবার নতুন কইরা আন্দোলনের সাফল্য ব্যর্থতা নির্ধারিত হয়। এইগুলা যদি না থাকতো তাইলে চলমান প্রসেসরে মারফিতি কথা বইলা মনে হইতো।
১৪. ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৫৩
comment by: বিবর্তনবাদী বলেছেন: +++++++
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:৪৯

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস এ লট।
১৫. ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১:০৬
comment by: ফারহান দাউদ বলেছেন: মাঝে মাঝে খুব হতাশ লাগে,মনে হয় এই সানী টাইপ জানোয়ারগুলারে পিটায়া আজীবনের জন্য পঙ্গু কইরা দেয়াটাই ভাল সমাধান,আইন আদালতে গেলেই ক্যামনে জানি জানোয়ারগুলা বাইর হয়া আসে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:৫০

লেখক বলেছেন: অদ্ভূত!
১৬. ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৫৭
comment by: ফাহমিদুল হক বলেছেন: পুনর্মূল্যায়ন বলতে আমি এইখান থেকে শিক্ষা নেবার কথা বোঝাতে চেয়েছি।
অবশ্যই এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, প্রতিরোধের।
অভিজ্ঞতা বলে (সবাই সেটা জানেও) শিক্ষার্থীদের একটা ইসু্যতে প্রচুর জনসমাবেশ হলে (আন্দোলনটা জনআন্দোলনে রূপ নিলে) তা সাধারণত সাব্যর্থ হয়না।
জাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টা দূর থেকে স্পষ্ট বুঝতে পারছি না।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:১০

লেখক বলেছেন: একটু ভুল বুঝাবুঝি হইতে ধরছিল।
এখন ক্লিয়ার হইছে।
বিষয়টা ক্লিয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ফাহমিদ ভাই।

No comments:

Post a Comment