Tuesday, March 3, 2009

জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার কুড়ি বছর

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:২৫
শেয়ার করুন: [Add to digg] [Add to FURL] [Add to blinklist] [Add to reddit] [Add to Technorati] [Add to YahooMyWeb] [Add to Co.mments] [Add to NewsVine] Facebook [new feature]

উপন্যাস হিসাবে জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা ছিল প্রথম প্রতিশ্রুতি। ফাল্গুন ১৩৯৪ মোতাবেক ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ সালে শহীদুল জহিরের প্রথম উপন্যাস হিসেবে ৪৮ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্রাকার এ বইটি প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের আকার প্রকার নিয়া বিস্তর বিতর্ক সত্ত্বেও প্রকাশকালে কিংবা এখন কুড়ি বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও অনেকেই একে উপন্যাস বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সে অনুসারে আশির দশকে কবিতা গল্প ও চিন্তাচর্চায় নতুন ধারায় আগমনের যে সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল উপন্যাসে তার প্রথম নিদর্শন ছিল এই উপন্যাসটিই। আশির দশকের লেখকদের মধ্যে উপন্যাসচর্চা কোনো ধারা হিসেবে গড়ে ওঠে নাই। তখনকার লিটল ম্যাগাজিন চর্চাকারী প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের মধ্যে এক নাসরিন জাহান ছাড়া আর কেউ উপন্যাস রচনা অব্যাহত রাখেন নাই। তিনি বাদে ঔপন্যাসিকের কাতারে আসন পেয়েছেন শহীদুল জহির। মামুন হুসাইন নিজের আকারে-প্রকারে উপন্যাসোপম লেখাকে তিনি উপন্যাস না বলে ফিকশন বলেন বিধায় ঔপন্যাসিকদের কাতারে তিনি এখনও অনাশ্রিত। ইতিমধ্যে সেলিম মোরশেদও উপন্যাস লিখেছেন। কবি সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ লিখেছেন। কিন্তু তাদের ঔপন্যাসিক হিসেবে গৃহীত হতে দেখা যায় না। এ বাদে আশির দশকের লেজেন্ডারি লেখকরা নিদেনপক্ষে গল্প লেখাও অব্যাহত রাখেন নাই। তাদের একটি বা বড় জোর দুইটি বইয়ের ভার নিয়া তরুণ বাংলা সাহিত্য আজ অবধি তৃপ্তির ঢেকুর তুলে চলেছে। সংখ্যা দিয়া সাহিত্যের তুল্যমূল্য না সম্ভবে। কিন্তু প্রজন্মের সকলে লেম্পেডুসা হয়ে জন্মাইছেন এইটাও কি সম্ভব? একে তো খুব কম লোক অনিয়মিতভাবে হলেও সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রাখছেন, তার ওপর আরও কম লেখক লিখে সাহিত্য চর্চা করেছেন। আর উপন্যাস লিখেছেন আরও কম লেখক। ফলে, আশির দশকে যে সম্ভাবনা দেখা দিয়াছিল অংকুরোদগমেই স্থগিত হয়ে আছে। অর্থাৎ আবার কুড়ি বছর পর যদি তোমার সঙ্গে আমার হঠাৎ দেখা হয়ে যায় তবে দেখতে পাবো আশির উপন্যাস তেমনিই আছে, অর্থাৎ জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় স্থগিত। গত বিশ বছরে আশির দশকের তরুণ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ অবদান হিসেবে বহু চর্চিত, বহু উচ্চারিত ও বহু নন্দিত এ লিজেন্ডারি উপন্যাস। ফলে কবিতার মতো কিংবা গল্পের মতো উপন্যাস কোনো ধারাই তৈয়ার করতে পারে নাই। বাংলাদেশের উপন্যাস এখনও পঞ্চাশের রাজাধিরাজ, ষাটের সম্রাট, সত্তরের সামন্তপ্রভুদের হাতে। সেখানে এখনও আতর-লোবানের গন্ধ, দরবারী সাজগোজ, মার্কসীয় বিশ্ববীক্ষা, এখনও চন্দন কাঠের সৌরভ, বিষণœতা, মনোলগ, বিবমিষা, আধুনিকতার টানাহেঁচড়া, আদিকালের নায়কত্ব, মধ্যবিত্তের পৃষ্ঠপোশন, হালকা প্রেমসংকটের মধ্যে ঘুরে ফিরে পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। আমাদের উপন্যাসে ব্যক্তির মুক্তি ঘটে নাই। ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে পারেন নাই বলেই ঔপন্যাসিকরা কালেকটিভের সন্ধানে বাহির হইতে পারেন নাই। সময় ও সমাজ এখনও উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র হয় নাই। ব্যক্তির খুচরা অনুভূতি-সংকটের বাইরের বৃহত্তর ও নতুনতর সংকট এখনও আমাদের উপন্যাসের অনধিগম্য। অথচ আশা করা গিয়েছিল : সত্তরের ঝড়-ঝঞ্ঝা যাদের স্পর্শ করে নাই, ষাটের বিষণœ দুনিয়ার মধ্য দিয়া যাদের আসতে হয় নাই, সামরিক শাসনের ভেতর দিয়া যাদের আসতে হয়েছে বটে কিন্তু সামরিক শাসনকে যারা পরাজিত করেছে, অপেক্ষাকৃত উন্মুক্ত তথ্যপ্রবাহের পৃথিবীতে রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিক স্বাধীনতা আস্বাদনের ভেতর দিয়া যারা সাহিত্যে শামিল আছেন তাদের হাত দিয়া একটা নতুন ধারা এবং নতুন ধারার সাহিত্যের বাজার গড়ে উঠবে। কিন্তু তা হয় নাই। যা হয় নাই, যা হইতে গিয়াও হয় নাই, যা হওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে তা নিয়া আলোচনায় কী ফল? ফল একটাই আপাতত। জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সাহিত্যিক পরিপ্রেক্ষিতটাকে স্মরণে আনা।
জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা হলো বহু নিঃসন্তান ব্যক্তির মধ্যে এক ব্যক্তির সন্তান। বাবার বন্ধুদের আদরে আপ্যায়নে বড় হওয়া একমাত্র পুত্র। পুরাকালে হলে বলা হইতো সাত রাজার ধন। সফল বটে, সার্থকও বটে। কিন্তু পুরো একটি প্রজন্মের গর্বের বিষয়। সেনসেটিভ ইস্যু।
আমি ১৯৯৭ সালে একবার, ২০০৭ সালে একবার সাকুল্যে এ দুই দফা নভেলাটি পড়েছি। এরশাদ শাসন বিরোধী আন্দোলনের বাস্তবতায় আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে বোঝাপড়ার ফলে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এক অসহায় ভিক্টিমের মধ্যে নতুন করে যে ভীতি তৈয়ার হয় এবং যার পরিণতিতে সে পুরাতন বসতবাটি ত্যাগ করে নতুন একটি বাসস্থান বেছে নেবার তাড়না বোধ করে। যে নতুন স্থানটিতে সে অতীত পরিচয় গোপন রেখে বেঁচে থাকতে পারবে। ১৯৮৬ সালে যখন উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় তখন লেখকের কাছে এটা ভীষণ প্রাসঙ্গিক ও তাড়িত করার মতো একটা বিষয়। কেন এক কুখ্যাত রাজাকারের পুত্র হরতাল শেষে সবাইকে ধন্যবাদ দেয় এ নিয়েই উপন্যাসের মুখ্য চরিত্রটি তীব্র তাড়না বোধ করে। এবং ফাশব্যাকে তার এই তাড়নার কারণ লেখক আমাদের কাছে পরিষ্কার করেন। ১৯৯৭ সালে আমি যখন উপন্যাসটি পড়ছিলাম তখন আওয়ামী লীগ-জামাত সম্মিলিত আন্দোলনের ফসল হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার ঐক্যমত্যের সরকার গঠন করেছে। তাদের সমর্থন দিয়েছে ১৯৮৬ সালে যার বিরুদ্ধে হরতাল পালন করে রাজাকারের সন্তান সবাইকে ধন্যবাদ দিচ্ছিল সেই সামরিক শাসকের দল। আর ২০০৭ সালে যখন উপন্যাসটি আবার পড়লাম তখন বিএনপি-জামাত সরকার ক্ষমতা থেকে সদ্য চলে গেছে। যে রাজাকারের সন্তানের ধন্যবাদ আবদুল মজিদ সহ্য করতে না পেরে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজাকারের বোঝাপড়ার রাজনৈতিক ধারাক্রম নিয়ে শংকিত হয়ে স্থানচ্যুতির সিদ্ধান্তকে বেছে নিয়েছিল, সেই রাজাকারদের সন্তান নয়, সেই রাজাকারদের নেতারা বিএনপির সঙ্গে মিলে দেশ শাসন করে আপাত শীতনিদ্রায় আচ্ছন্ন। দুর্নীতি দমন চলিতেছে।
স্বাভাবিক কারণেই ১৯৮৭ সালের পরের ঘটনা উপন্যাসে নাই। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিক্টিম আবদুল মজিদদের ভীতি ও শঙ্কা কত বিস্তৃত হয়েছে তার বিবরণও এইখানে নাই। জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা ব্যক্তির জীবনে জাতীয় রাজনৈতিক সংকটের প্রভাব ও তার পরবর্তী অভিঘাত নিয়ে আলোচনার সূচনামাত্র করেছিল। করেছিল বলেই সময়ে খুঁটি গেড়ে গেড়ে সহজেই সময়ের একটা তুল্যমূল্য বিচার আমরা দেখাতে পারছি। কিন্তু পুরো চিত্রটা আমরা পাচ্ছি না, কারণ উপন্যাসটি ওই পর্যন্ত এসেই থেমে আছে। আমাদের বহুমাত্রিক, বহুস্তর সংকটকে স্পর্শ করার মতো আর কোনো ঔপন্যাসিক উদ্যোগ আসে নাই। ফলে, আমাদের ক্ষুদ্র জাতীয় রাজনৈতিক জীবনের আর কোনো অভিঘাত আমাদের উপন্যাসে এসে পড়লো না। এবং আমাদের জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার পুরো চিত্রটা অপরিচ্ছন্নই থেকে গেল। এই রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাক্রম যদি মাথায় রাখি তাহলে জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা হলো কুড়ি বছর আগের কাহিনী। একটা ডকুমেন্ট। হ্যাঁ, এর মধ্যে ওইটুকুই পর্যালোচনার বিষয় যে ঔপন্যাসিক ২০ বছর আগেই রাজাকারদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার সম্ভবনার কথা পুরোপুরি ভাবতে না পারলেও তাদের ক্রমবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলেন।
বাকী থাকে ভাষা ও বর্ণনার সক্ষমতা। শহীদুল জহিরের ভাষা যাদুকরী। অনেকে জাদুবাস্তবও বলে থাকেন একে। গাঁথুনি/বয়ন আকর্ষণীয়। নিজের একটি ভাষাভঙ্গি তিনি তৈয়ার করেছেন। এবং এই বিশেষ ভাষাভঙ্গির মধ্যেই তার আবর্তন। জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে এই ভাষাভঙ্গির শুভ সূচনা হয়েছিল। পরে তা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এই ভাষার প্রাথমিক নজির জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা। ভাষা নিয়ে দক্ষ বাজিকরের মতো যে ডিলিং শহীদুল জহিরের তা এইখানে অনেকটাই অনুপস্থিত। এ কথা ঠিক পরবর্তী কালে তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে গল্প লিখেছেন। সেগুলো প্রাসঙ্গিক ও আলোচ্য, কিন্তু এইখানে সেগুলোর উল্লেখ খুব জরুরি নয় বলেই মনে হচ্ছে। যেহেতু আমার প্রথম বিবেচনা ওই উপন্যাসটিই।
সাধারণ বিচারে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ উপন্যাসের জন্য খুব কার্যকর বিষয় নয়। কারণ একজন এনলাইটেন্ড লেখক এ নিয়ে কী ভাবেন, এর সংকটকে তিনি কিভাবে দেখেন, এ নিয়ে তার অনুভূতির স্পর্শকাতরতা খুব অচেনা বিষয় নয়। বরং সাধারণত জানাশোনার মধ্যেই লেখকরা আবর্তিত হন। কোনো বিষয় যখন উপন্যাসিত হয় অর্থাৎ একে যখন তার জানাশোনা বিন্যাসের থেকে পৃথক আরেকটি বিন্যাসে এনে হাজির করা হয় তখন তাকে বহু দিক ও তল থেকে দেখারই নিয়ম। এজন্য মুখ্য প্রকল্পটিও অনেক সময় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এরকম সক্ষমতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে বিষয় করে কেউ লিখতে এসেছেন বলে মনে হয় না। আর লেখেননি বলেই, ঔপন্যাসিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে দেখার উদ্যোগ আমাদের এখানে আসেনি। এখানে গদ্যে যা হয়েছে তা হলো স্রেফ একতলীয় বর্ণনা। উপন্যাসিত হয়নি বিষয়টি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো লেখকের ভিন্ন কোনো রিডিং আছে কি না তার আভাসও মেলেনি। ইনক্লুডিং শহীদুল জহির, ব্যাপারগুলো ওই পর্যন্তই থেকে গেছে।

উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল শিল্পতরু প্রকাশনী থেকে। দাম মাত্র চল্লিশ টাকা। যতদূর জানি তাতে শাহবাগের বইয়ের দোকানে উপন্যাসটি এভেইলএবল থাকার কথা।



প্রকাশ করা হয়েছে: ডায়েরি বিভাগে ।



* ২২ টি মন্তব্য
* ৫৬৭ বার পঠিত,

Send to your friend Print
রেটিং দিতে লগ ইন করুন
পোস্টটি ৯ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি


এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন

আপনার নিজস্ব ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন

আপনার নাম :

আপনার ই-মেইল

আপনার বন্ধুদের ইমেইল

মেসেজ (নীচের মেসেজটি আপনার ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন
hi, i have been reading a nice wonderful post in http://www.somewhereinblog.net and would like to share it with you. Here is the post link http://www.somewhereinblog.net/blog/mahbubmoreblog/28749180 , please visit the link and rate it if you like. :-)

নিজেকেও একটি কপি পাঠান



১. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৪৮
comment by: মাঠশালা বলেছেন: ৫
২. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৪৯
comment by: মোসতফা মনির সৌরভ বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে বইটি পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে।
৩. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:২২
comment by: সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন: ভালো লাগলো..।
শুভেচ্ছা।
৪. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৮:০২
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: মাঠশালা,
ধন্যবাদ।
মোসতফা মনির সৌরভ,
পড়েন। ভাল বই।
শিরিন সুলতানা সাজি,
ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা।
৫. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৫৬
comment by: সাতিয়া মুনতাহা নিশা বলেছেন: ভালো লাগল
৬. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:০৪
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: সাতিয়া মুনতাহা নিশা,
থ্যাংকস।
৭. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:৫১
comment by: মৃদুল মাহবুব বলেছেন: কত কিছু যে পড়া বাকি! পড়ে ফেলব এবার।
৮. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৭ ভোর ৬:২৭
comment by: সাতিয়া মুনতাহা নিশা বলেছেন: মাহবুব ভাই,আমার পোস্টে আপনার কমেন্ট পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
তবে দুঃখিত,আপনি যে লেখাটা রেডি করে রেখেছিলেন,তা তো আর আমার জানার কথা নয়।
ভালো থাকবেন,ধন্যবাদ।
৯. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৬
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: মৃদুল,
হ।
সাতিয়া মুনতাহা নিশা,
ব্যাপার না।
১০. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৫২
comment by: মেহরাব শাহরিয়ার বলেছেন: মাহবুব মোর্শেদ ভাই , পুরনো দিনের কোন লেখা বা ভাবনা ২০/২৫ বছর পর কতটা ডালপালা মেললো , এমন আলোচনাগুলো দারুন লাগে , সে কারণেই লেখাটা পড়লাম । বরাবরের মত ভালো ......
পরীক্ষা শেষ ৩/৪ দিন আগে, বিএসসি ইন্জিনিয়ারিং সার্টিফিকেট টা এখনও পাইনি(রেজাল্ট ১ মাস পর) , আপাতত এমবিবিএস(মা বাবার বেকার সন্তান) হয়ে আছি
১১. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:১৫
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: মেহরাব,
এই বইটা নিয়া আমার মত যে এইরকম এটা আমি জানতাম না। লিখতে গিয়া ১০ বছর আগে পরের হিসাব মেলাতে গিয়া দেখলাম ঝামেলা হয়ে গেল। লেখাটা পরশু লিখছি। এমনি লোকে জিজ্ঞেস করলে বইটা নিয়া সহজাত উচ্ছাস প্রকাশ করে হয়তো ছেড়ে দিতাম। লিখতে গিয়া অনেক উপকার হইলো।
থ্যাংকস।
এখন তাইলে ধুমসে লেখেন। কারণ ব্যস্ত হইতে সময় বেশি লাগবে না।
১২. ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:০৯
comment by: তপেশ্বর বলেছেন: ৫ প্লাস মাহবুব ভাই। অচিরে পড়ব।
১৩. ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:১৮
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: থ্যাংকস। পড়ে ফেলেন।
১৪. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১১:১০
comment by: ফাহমিদুল হক বলেছেন: উপন্যাসটা আমাকে পড়তে দেন সেলিম রেজা নিউটন। তিনি তখন শহীদুল জহিরে খুবই মুগ্ধ ছিলেন। কিন্তু পরে তার সেই মুগ্ধতা সমালোচনায় পরিণত হয়। ঐ যে আপনি বলেছেন, তারা ভাষা জাদুকরী, কখনও জাদুবাস্তবতা হয়ে হাজির হয়। কন্টেন্টের চাইতে ভাষা বা আঙ্গিক নিয়ে কারিকুরি সম্ভবত পরে তাকে বীতশ্রদ্ধ করে তোলে। তবে শহীদুল জহিরকে আমার অতটা 'আঙ্গিকসর্বস্ব' মনে হয়নি। তার ভাষার জাদুতে মুগ্ধ হয়ে বিশাল আকারের গল্পগুলো এক নিঃশ্বাসে পড়তে পড়তে শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, ‌‌'গল্প'ও অনেক আছে তাতে। 'কাঠুরে ও দাঁড়কাক', 'ডলু নদীর হাওয়া' কী সাংঘাতিক একেকটা গল্প। তবে 'চতুর্থ মাত্রা'য় কোনো গল্প নেই। আতিকের করা 'চতুর্থ মাত্রা' ফিল্মটি কি দেখেছেন? আমার দেখা হয়নি। 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা' মনে অতটা রেখাপাত করেনি, যতটা কিছু গল্প করেছে। আপনার পোস্ট পড়ে আবার পড়তে উৎসাহ বোধ করছি। দ্বিতীয়পাঠে আরও ভালো লাগতেও পারে।
সত্যি, আশির লিটলম্যাগ সৈনিকেরা গেল কোথায়? নব্বইয়ের কী অবস্থা বলেন তো? আপনার কী মনে হয়, অনেকে টিকবেন?
১৫. ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৫৭
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: ফাহমিদ ভাই,
আপনার কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। শহীদুল জহির ততোটা আঙ্গিক সর্বস্ব নন। তার প্রায় সব গল্পই আমাদের পছন্দ। কিন্তু জহির বিষয়ে আমার আপত্তির সঙ্গে জহির বা তার লেখা জড়িত নন। তার পাঠকদের আদিখ্যেতাটা দায়ী। জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা আমার আগে পড়া ছিল, কিন্তু লোকমুখে এই বইটার কথা এত শুনেছি যে এটা প্রায় পবিত্রগ্রন্থের মর্যাদা পেয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছিল। ফলে আবার পড়ে আমার মতটা ঝালাই করার চেষ্টা করলাম। আশির লিটলম্যাগ সৈনিক আর নব্বইয়ের লেখকদের নিয়ে আলাদা পোস্ট দেয়ার ইচ্ছা আছে। আপনি তো নব্বইয়ের। আপনি বলেন আগে আপনার কী মনে হয়? নব্বইয়ে অনেকে কিন্তু নিয়মিত লিখবেন শেষ পর্যন্ত।
১৬. ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১১:১১
comment by: ফাহমিদুল হক বলেছেন: আপনার পোস্টের জন্য অপেক্ষা করছি।
নব্বইয়ের কবিরা নাকি অন্যান্য দশকের চাইতে অগ্রগামী (সম্ভাবনার স্ফূরণ অর্থে)। খোন্দকার আশরাফ হোসেন নব্বইয়ের দশকের শেষে বাংলা একাডেমীতে (তরুণ লেখক প্রকল্পের ক্লাসে) বলেছিলেন অন্তঃত তিনজন কালোত্তীর্ণ হবেন। তিনি অবশ্য নামগুলো বলেননি। কবিতা আমি বিশেষ বুঝিনা। তবে আমি দেখি অন্তঃত ডজনখানেক গল্পকার 'ভালো' লেখেন। এরা সবাই আমার চেয়ে ভালো লেখেন (নিজের সঙ্গে মেলানোটা হয়তো অপ্রাসঙ্গিক)। আপনি যে-মাত্রায় পোস্টে আলোচনা করেছেন, উপন্যাস-বড়োগল্প লিখে বলার মতো করে পরের কয়েকটি দশকে টিকে থাকা -- সেইটা নব্বইয়েদর জন্য বলা মুশকিল। বিশের দশকে নব্বইয়ের আলোচনাটা ভালো হবে, যেমন এখন আপনি করলেন আশির। আমার ব্যক্তিগত অবস্থা হলো, একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে প্রবন্ধ-গবেষণায় মনোযোগ বেশি দিতে হয়, ফলে গল্পের লালনটা ভালো হয়না। আমি যেটা বুঝি, ভবিষ্যতে আমার অবস্থান (যদি আদৌ কিছু প্রতিষ্ঠত হয়) প্রবন্ধসাহিত্যেই হবে। অনেক পাঠক বলেন, আমার গল্প পড়ে প্রবন্ধ পড়ার অনুভূতি হয়। বাণীতে ভর্তি!
১৭. ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১১:২৭
comment by: এস্কিমো বলেছেন: বইটা কেউ দান করবেন নাকি?

এভেইলএবল শব্দের বাংলা কি?
১৮. ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:২৯
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: ফাহমিদ ভাই,
আপনার মত পেয়ে লেখার কাজটা সহজ হলো।
গল্পে ননফিকশনাল অ্যাপ্রোচটা আমার খুব পছন্দ। গল্পে ননফিকশনের পক্ষে একটা প্রবন্ধ লিখে আমি অনেকের বিরাগভাজন হয়েছিলাম। কিন্তু এখনো আমি মনে করি গল্পটা জরুরি। কিন্তু যে কোনো একটা গল্প খুব জরুরি নয়। প্রবন্ধ ভাল হচ্ছে বলে ফিকশন ছাড়বেন না এই আশাই করি।
এস্কিমো,
আজিজ মার্কেট গেলেই পাবেন।
জানি না।
১৯. ২৬ শে জুন, ২০০৮ রাত ১০:২২
comment by: ইশতিয়াক জিকো বলেছেন: শাহবাগ বইয়ের দোকানে শিল্পতরুর সংস্করণটা নাই এখন। পাওয়া যায় পাঠক সমাবেশের সংস্করণ : শহীদুল জহির নির্বাচিত উপন্যাস। দাম ২৭৫ টাকা। সেই সংস্করণে জানা যায়, 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা'র প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮।

উপন্যাসের বাক্যকাঠামোয় "যখন...তখন"-এর পৌনঃপুন্য আমাকে বিরক্ত করে। এবং টুকটাক মুদ্রণপ্রমাদ ছাড়াও তাথ্যিক ভুলের সন্ধান পাই। যেমন, ঊনত্রিশ পৃষ্ঠার ছয় নম্বর লাইনে লেখা '...ক্লোরোফিল তার (ইসমাইল হাজামের) চেতনা নাশ করেছিল'। ক্লোরোফিলে চেতনা নাশ হয় না, যদিও চেতনা নাশ অবেদন অর্থে ব্যবহৃত হয় নাই, সম্ভবত ক্লোরোফর্মের সাথে গুলিয়ে ফেলেছিলেন শহীদুল জহির।

তবে পরে এন্টারবিহীন এ উপন্যাস আমার প্রিয় হয়ে দাঁড়ায়। তার কারণ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে ঊনিশশো পঁচাশির রাজনৈতিক বাস্তবতা না, পুরো উপন্যাস এক অনুচ্ছেদে বয়ানের বেলায় সময় নিয়ে নিরীক্ষা।

'সে রাতে পূর্ণিমা ছিল' আমাকে তেমন টানে নাই।

উপন্যাস নিয়ে আপনার এই পোস্ট, মন্তব্যসহ, ভালো লাগলো বলে প্রিয় পোস্টের লিংকে রাখলাম।
২৭ শে জুন, ২০০৮ সকাল ১০:৪২

লেখক বলেছেন: আপনাকে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
২০. ২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০০
comment by: মৃদুল মাহবুব বলেছেন: আপনার লেখাটা অনেকদিন পর আবার পড়লাম কেননা বইটা পড়া শেষ হলো। সামনাসামনি কথা হবে এই নিয়ে।
২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৩৫

লেখক বলেছেন: সামনাসামনি কথা হলে ভাল। কিন্তু পেছনে কথা হতে অসুবিধা কী?
আপনি আমার সঙ্গে একমত নন?

No comments:

Post a Comment