Tuesday, March 3, 2009

৩. এ পোর্ট্রেইট অফ এ ইয়াং আর্টিস্ট অ্যাজ এ মিডিওকার

২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:১০
শেয়ার করুন: [Add to digg] [Add to FURL] [Add to blinklist] [Add to reddit] [Add to Technorati] [Add to YahooMyWeb] [Add to Co.mments] [Add to NewsVine] Facebook [new feature]

এত মনোযোগ সত্ত্বেও তৃপ্তি আমার সংকটটাকে পুরো বুঝে উঠতে পারে কি না একবার ভাববার চেষ্টা করি আমি। বেশি দূর ভেবে উঠতে পারি না। হয়তো সে পুরোটাই বুঝতে পারে। লেখক হিসেবে আমার মূল্য সবচেয়ে বেশি ওর কাছেই। আমার লেখক বন্ধুদের ব্যাপারে আমার মতো করেই ভাবে সে। আমি যাদের পছন্দ করি সে নিজেও তাদের পছন্দ করে। আমি যাদের অপছন্দ করি সেও তাদের অপছন্দ করে। তার নিজের একটা বন্ধু-বান্ধবের সার্কেল আছে। বন্ধুরা বাসায় এলে ও আমাকে কখনো একটা বিদেশি কোম্পানির এক্সিকিউটিভ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় না। ভেতর থেকে সত্যিকার অর্থে ফিল করে বলে, ও একজন লেখক। এভাবেই পরিচয় দেয়। আমার খুব ভাল লাগে। মাঝে মাঝে আমার ভুল হয়ে যায়। আপন মনেই ভাবি, তৃপ্তির এই আচরণের সবটুকুই শুধু ভাল স্ত্রী হিসেবে দাযিত্ব পালনের স্বার্থেই করা। হয়তো সত্যিই সে আমাকে বড় লেখক মনে করে না। তৃপ্তিকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। ওকে নিয়ে এর বেশি নেগেটিভ কিছু ভাবতে পারি না। এমনকি বাড়ি ফিরতে ফিরতে সেল্ফ সাজেশন দিতে দিতে দরজার নক করি। দরজায় নক করার আগে নিজের মুখটা হাসি হাসি করে রাখি। তারপর আমার স্বভাব অনুসারে কলিংবেলে দুইবার চাপি। দরজার ওপাশে তৃপ্তির ছুটে আশা, অপেক্ষার অবসান এবং দরজা খোলা রুদ্ধশ্বাস অভিযান নিমেষে শেষ হয়। স্বেচ্ছায় তৃপ্তি সম্পর্কে নেগেটিভ চিন্তা থেকে সরে আসা আর মুখে কিছুক্ষণের জন্য মেকি হাসিটা ছাড়া আর কোনো অভিনয় আমার মধ্যে থাকে না দরজা খুলে যাওয়ার পর।
হোয়াট এ সারপ্রাইজ! ওই লাল শাড়ি পরেছো কেন?
তৃপ্তি সাধারণত শাদা ধবধবে ড্রেস পছন্দ করে। বাসায় সব সময় শাদা ড্রেস পরে। এমনকি রান্না ঘরের কাজ করার সময়ও। দুপুরের ঘুম সেরে উঠে রাতের খাবারের আয়োজন পর্যন্ত তার মুখটা একটু ফোলা ফোলা থাকে। হয়তো তখন তার পরণে শাদা ম্যাক্সি অথবা হালকা কাজ করা শাদা শাড়িই থাকে। অবাক হয়ে যাই আমি। কিভাবে যেন মোবাইলে একটা কল না দিয়েও সে বুঝে গেছে আমার মন খারাপ। হয়তো দুপুরের ঘুম সেরে নিজের ক্লান্ত চোখে সজীবতা ফিরিয়ে আনতে চোখে কাজ করেছে। অথবা স্রেফ গোসল করেছে, ঠাণ্ডা পানিতে। মুখের ফোলা ফোলা ভাবটা উধাও হয়ে গেছে। তৃপ্তি চোখ নাচায় শুধু। কিছু বলে না। আমি ফ্রেশ হয়ে বাথরুম থেকে বের হতে হয়ে এক কাপ চা হাতে তৃপ্তি এসে সামনে দাঁড়ায়।
হোয়াটস দ্য প্রোগ্রাম...? আমি একটু গলা গভীর করে বলি, বিজ্ঞাপনে যেমন শোনায় ঠিক সেইভাবে।
নাথিং। তৃপ্তি হঠাৎ সিরিয়াস হয়ে যায়। শোনো, মৌলভীবাজারে লাস্ট ট্যুরটার কথা মনে আছে তোমার? ওই যে, তোমাদের সব লেখক বন্ধু মিলে রাসে গেলা। ২০০৫এর নভেম্বরে। ওই সময় কিন্তু তুমি ডায়রিতে মজার অনেক কথা লিখছিলা।
তুমিও তো গেছলা? তুমি যাও নাই?
যাবো না কেন?
তুমি এইগুলা ভুলে যাও কেমনে?
তাই তো? এই কতাগুলো আমি ভুলে যাই কেমনে। কত মজা হয়েছিল। রাসপূর্ণিমায় সারারাত জেগে আমার সব লেখক-কবি মিলে মৌলভীবাজার পৌঁছালাম ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে। বিকালে একটা সাহিত্যসভা হলো। বাংলা ছোটগল্পের ওপর একটা বক্তৃতা দিলাম। সব কেমন করে যেন ভুলে যাই।
তুমি কিন্তু ওই রাস উৎসবের বর্ণনা থেকে শুরু করতে পারো লেখাটা। উপন্যাসটা।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন নিয়ে লেখা দরকার তাই না?
হ্যাঁ। আর শোনো। আমাদের পৌছানোর কথা মনে আছে? শ্রীমঙ্গলে চাঁদের দেখা মিললো সূর্য ডোবার সাথে সাথে। পাহাড়ের আড়ালে একবার চাঁদ হারিয়ে যায়। আমি সারাক্ষণ চাঁদ হারানো আর চাঁদ খুজে পাবার জন্য পথটা আকাশের দিকে তাকিয়েছিলাম। ঘন বন চারদিকে। চা বাগান। লোকাল বাসে গাদাগাদি করে আমার কতগুলো লোক। বাস আদমপুর পার হয়ে ধু ধু ধান ক্ষেতের ভেতরের পাকা রাস্তা দিয়ে চলার সময় আমি একেবারে অবাক হয়ে গেছলাম। চিৎকার দিতে গিয়ে দেখি তুমি আমার মুখে আঙ্গুল দিয়ে রেখেছো। হোয়াট এ মেস! অসাধারণ! ধান ক্ষেতটগুলোকে মনে হচ্ছিল নদী। ক্ষেত্রে শিষের ওপরে শিশির। তার ওপর চাঁদের আলো। পুরো নদীর মতো লাগছিল।
তৃপ্তির বর্ণনা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। এই না হলে লেখকের বউ। ওর দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি। কীভাবে এত কিছু মনে থাকে ওর?
তোমার এত ডিটেইল মনে থাকে?
গাড্ডু, তোমার ডায়রিতে আছে এইসব। তুমি ডায়রিগুলো নেড়েচেড়ে দেখো না। লিখবা নাকি এইটা নিয়ে?



প্রকাশ করা হয়েছে: ফিকশন বিভাগে ।



* ২৪ টি মন্তব্য
* ২৩৩ বার পঠিত,

Send to your friend Print
রেটিং দিতে লগ ইন করুন
পোস্টটি ৭ জনের ভাল লেগেছে, ৪ জনের ভাল লাগেনি


এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন

আপনার নিজস্ব ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন

আপনার নাম :

আপনার ই-মেইল

আপনার বন্ধুদের ইমেইল

মেসেজ (নীচের মেসেজটি আপনার ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন
hi, i have been reading a nice wonderful post in http://www.somewhereinblog.net and would like to share it with you. Here is the post link http://www.somewhereinblog.net/blog/mahbubmoreblog/28764770 , please visit the link and rate it if you like. :-)

নিজেকেও একটি কপি পাঠান



১. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৩৫
comment by: হট্টগোল বলেছেন:

আপনার লেখা পড়লেই মুগ্ধতা আমাকে ঘিরে ধরে।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪২

লেখক বলেছেন: আপনার কমেন্ট পড়েও আমার একই অবস্থা হয়।
২. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৩৭
comment by: চতুরভূজ বলেছেন: এটিও চমৎকার লাগল।

+
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪২

লেখক বলেছেন: থ্যাঙকস।
৩. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৪১
comment by: হলদে ডানা বলেছেন: প্লাস




আর কিছু বলা যাবেনা, রাজাকার হয়ে যেতে পারেন।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪২

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৪৪
comment by: সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন: তিনটা লেখাই পড়লাম........তৃপ্তি করে......।:)
তৃপ্তি ছুঁয়ে থাকলে এমনই হয়.........আরো লেখার প্রত্যাশায়।
শুভেচ্ছা রেখে গেলাম।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৩

লেখক বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা।
৫. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৪৬
comment by: মৃদুল মাহবুব বলেছেন: চলুক........
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৩

লেখক বলেছেন: দেখা যাক।
৬. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৫৬
comment by: মাঠশালা বলেছেন: ....................................
.....................................
.........................................
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৪

লেখক বলেছেন: ...............//////////////////??????????????
৭. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৫৯
comment by: একরামুল হক শামীম বলেছেন: ! ! ! ! !
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৪

লেখক বলেছেন: ####
৮. ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:০৪
comment by: সাতিয়া মুনতাহা নিশা বলেছেন: এই না হলো লেখকের বউ তৃপ্তি,লেখকের লেখার তৃপ্তি........আর আমাদের পাঠকের পড়ার তৃপ্তি!!!!
তৃপ্তির তৃপ্ততায় দেখি তৃপ্তির ছড়াছড়ি...........
তৃপ্তিতে থাকবেন,যদিও জানি আপনাদের মতো লেখকদের অতৃপ্তিটাই বেশি থাকে,আরো ইকটু দারুণ কিছু লিখে তৃপ্তি পাবার আশায়.........
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৫

লেখক বলেছেন: এইটাকে গল্প মনে হচ্ছে না এখনও?
৯. ২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১২:৩৭
comment by: ফারহান দাউদ বলেছেন: আছি।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৫

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
১০. ২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:০৭
comment by: মেহরাব শাহরিয়ার বলেছেন: চলুক ..........শুরুতে তো ভেবে বসেছিলাম সত্যি , এখন গল্পে মোড় নিয়ে ফেলেছে :)
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৭

লেখক বলেছেন: আমি গল্প লিখলে মানুষ ভাবে সত্যি আর সত্যি লিখলে মানুষ ভাবে গল্প।
১১. ২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৭
comment by: নিহন বলেছেন: জাক্কাচ , চলুক......................
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:১৩

লেখক বলেছেন: চেষ্টা করতেছি। ধন্যবাদ।
১২. ২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫১
comment by: মিরাজ বলেছেন: পড়ছি ।

গতিশীল লেখনী ।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:০২

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ মিরাজ ভাই।

No comments:

Post a Comment