Tuesday, March 3, 2009

চার শিক্ষকের সাজা ও ছাত্র বিক্ষোভের আগে পরে সরকার ও আইনের গতিপ্রকৃতি

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:১৯
শেয়ার করুন: [Add to digg] [Add to FURL] [Add to blinklist] [Add to reddit] [Add to Technorati] [Add to YahooMyWeb] [Add to Co.mments] [Add to NewsVine] Facebook [new feature]

কিছুদিন আগে সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় একটা কবিতা লিখছিলেন। কবিতার বিষয় আইনের শাসন। কবিতা হুবহু মনে নাই। তবে এসেন্সটা মনে পড়ে। কবি বলেন, আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দাও, এটা কার কথা? প্রত্যেক সরকারের আইনমন্ত্রীর। আর আইন তো নিজস্ব গতিতে চলতে পারে না। তাই নিজের গতিতে আইন চললে সরকারের লাভ। সরকারের কাজ হলো বিচার বিভাগকে সহায়তা করা। তাহলেই আইন ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারবে। কবিতাটা প্রবন্ধ হিসাবে ভাল। উপসম্পাদকীয় হিসাবে আরও ভাল। তিনি এটা লিখেছিলেন বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়ার খুশীতে। আমরাও তখন খুশী ছিলাম। তেমন খুশী এখনও আছি। এই সরকারের আইন উপদেষ্টা একথা বলেন নাই যে, আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেন। উনি বলছেন, এইটা এই দেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার যে কেউই আইনের উর্ধে নয়। আর কী বলছেন? বলছেন, আদালতের রায় সত্ত্বেও সরকারের বিবেচনা করার সুযোগ আছে। কেমনে? কেউই আইনের উর্ধে নয়। আদালতের রায়ই তাহলে শেষ কথা। তাই না? তাহলে সরকার আদালতের রায পুনর্বিবেচনা করে কেমনে?
সব সরকারের কিছু আপ্তবাক্য থাকে। কেউ বলে আমরা ভোট ও ভাতের রাজনীতি করি, কেউ বলে আমরা উন্নয়ন ও অর্থনীতির রাজনীতি করি। কেউ বলে আমরা জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করি। কিন্তু, যে লাউ সেই কদুই। কৃষক যখন সার পায় না তখন এই সরকারের উপদেষ্টাও বলেন, সার সংকট মিডিয়ার সৃষ্টি। জিনিশপত্রের দাম বাড়লে এই সরকারের উপদেষ্টাও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে। এই সরকারের অর্থ উপদেষ্টাও বলেন, সিন্ডিকেট বলে কিছু নাই। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। ফলে, কেউই আইনের উর্ধে নয় কথাটাও মাননীয় উপদেষ্টা একটা কথার কথা হিসাবেই বলেন বলে মনে হয়। কারণ কথাটা কেন যেন শোনা শোনা লাগে। শোনা শোনা শোনা।
সাধারণ বিচারে কিন্তু কথাটা খুব মূল্যবান। তারেক জিয়া, শেখ হেলাল, সেলিম রেজা নিউটন কেউই আইনের উর্ধে নয়। খুব ন্যায্য কথা। তার পরের কথা হলো সরকার নিজে কি আইনের উর্ধে?
ব্লগাবাসীর মনে থাকার কথা, বিএনপি রেজিমের শেষ দিকে দেশবাসী একেকজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কঠিন বিধানটা সকলের মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল। কোন বিচারপতির পরে কোন বিচারপতি, তারপর কে এই বিচারবিভাগীয় কুষ্ঠিবিচারও ঠোঁতস্থ হয়ে গিয়েছিল। টাইম বোমায় সেট করা সময়ের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের সময় এসে গিয়েছিল। পরে ড. ইয়াজুদ্দীন রাষ্ট্রপতি শাসিত টাইপ সরকার গঠন করে আবার সংবিধানের দোহাই দিয়ে এগারোই জানুয়ারি পর্যন্ত বোমা ফিট করে দিলেন। বিএনপি প্রায় ক্ষমতায় আসে আসে। তারপর তো এই সরকার। সংবিধান, নব্বই দিন, নির্বাচন কমিশন আইন সব দেখি সবাই ভুলে গেল। কারণ, এনারা ভাল একটা কজ দাঁড় করিয়েছেন। দুর্নীতি দমন। এই কজে আমরা সবাই কুপোকাত। আইনের বিধান মানলে তো এই সরকারের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ। বিদ্যমান সরকারকে বেআইনি বলার মতো স্পর্ধা হয়তো আমাদের হবে না। কিন্তু সরকার যে কোর্টে গিয়ে বৈধতা নিয়ে আসেনি, নিজেদের লেজিটিমেসি কোনোভাবে প্রমাণ করেনি এইটা তো আমরা জানি, তাই না? আইনগতভাবে, নাজুক ও প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে থাকা একটি সরকার কিসের জোরে কাজ করে? তারা আসলে জোরে কাজ করে না। তারা কাজ করে, নিজেদের এক্সিট পয়েন্ট তৈরি করার কাজে। এই পয়েন্ট তৈরি না করলে, তাদের কাজ বৈধতা হারালে এ দেশের দুর্নীতি বিরোধী মানুষের মাথা হেঁট হয়ে যাবে। সিভিল সোসাইটি আত্মহত্যা করবে। আমাদের শিক্ষকরা সরকারের মুখ্য এজেন্ডায় বাধা দিছিলেন। অর্থাৎ এক্সিট পয়েন্ট তৈরি করার আগে যে টলটলায়মান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে ঘি ঢেলেছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই ঘি ঢালার পক্ষপাতি না। যে ঘি ঢেলে আমি স্বীকার করতে পারবো না, সে ঘি কেন ঢালবো। আজকে আমরা সবাই বলছি, শিক্ষকরা আন্দোলনে ইন্ধন দেননি। আদালতে কেউ তা প্রমাণ করতে পারেন। এইটা সত্য হলে কিন্তু পুরো বিক্ষোভের স্পিরিটের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়। আবার শিক্ষকরা যদি বীরত্বের সাথে স্বীকার করেন তারা ন্যায্য মনে করেছেন বলে ছাত্রদের সমর্থন দিয়েছেন তাহলে আবার তাদের শাস্তি হয়ে যায়। যে কোনো আন্দোলনের একটা লক্ষ্য থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ কোনো আন্দোলন ছিল না। আন্দোলন বলতে যদি আমরা কোনো পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বুঝি। তাইলে এইটা কী আছিল? এইটা হলো, আর্মি বনাম ছাত্রদের ইগো সমস্যা। এখনও সেই অবস্থাতেই আছে বলে অনেকেই মনে করেন। ওই দুইদিন ছাত্ররা ইগো প্রদর্শন করছে। এখন আর্মি করতেছে। আর্মি ছাড়াও আমাদের চলবে না, ছাত্র ছাড়াও চলবে না। প্রত্যেকে প্রত্যেকের ইগো নিয়া চলুক। আমরা শান্তিতে থাকি। এই সাধারণ চাহিদা সত্ত্বেও দেখলাম সরকার পইড়া যাইতে নিছিল। সারাদিন টিভির সামনে থেকেও বুঝতে পারি নাই সরকার পড়তেছে কেন? কী ব্যাপার। একমাত্র তখনই চোখ খুলে গেল। বুঝলাম, মিডিয়া এই সরকারের সংসদ হিসাবে যে বাখোয়াজি করতেছিল তা যে মিথ্যা এইটা বুঝতে পারতেছিলাম। কিন্তু সরকারের পড়াটা আমি তখন সমর্থন করি নাই। কারণ সংবিধান বহির্ভুত সরকার হলেও তাদের শান্তিপূর্ণ উপায়ে চলে যাওয়ার রাইট আছে। এরশাদ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ উপায়ে গেছে। এরা কী দোষ করলো। তারও চেয়ে বড় কথা, বিক্ষোভকারীদের কাছে ক্ষমতা নেয়ার বিকল্প কোনো শক্তি উপস্থিত ছিল না। ক্ষমতা এদের হাত থেকে কেউ নিতে হলে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় এদেরকেই আবার নিতে হতো। যাই হোক সরকার এই ব্যাপারটাকে সিরিয়াসলি নিছে। কিন্তু তারা একটা হিসাব করে নাই যে, তারা ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। ফলে, শিক্ষকরা যে ছাত্রদের বিক্ষোভে পাশে দাঁড়াইছেন তা করেছেন স্বভাবসুলভ সংহতি বোধের কারণে। সবসময় পাশে থেকেছেন, এ সময় কেন নয়? ফলে ব্যাপারটা ঘটে গেছে। শিক্ষকরা গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করেছেন। তখনও পর্যন্ত বোঝেন নাই। গণতন্ত্র চলবে না। তারা বুঝতে পারেন নাই, মৌনমিছিল না করে তাদের একটা রাজনৈতিক দল করা দরকার আছিল।



প্রকাশ করা হয়েছে: পঞ্চতন্ত্র বিভাগে ।



* ২৪ টি মন্তব্য
* ২৭৯ বার পঠিত,

Send to your friend Print
রেটিং দিতে লগ ইন করুন
পোস্টটি ৮ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি


এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন

আপনার নিজস্ব ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন

আপনার নাম :

আপনার ই-মেইল

আপনার বন্ধুদের ইমেইল

মেসেজ (নীচের মেসেজটি আপনার ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন
hi, i have been reading a nice wonderful post in http://www.somewhereinblog.net and would like to share it with you. Here is the post link http://www.somewhereinblog.net/blog/mahbubmoreblog/28749609 , please visit the link and rate it if you like. :-)

নিজেকেও একটি কপি পাঠান



১. ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৪২
comment by: মাঠশালা বলেছেন: মাহবুব ভাই,
থ্যাংকস।
এখন অফিস থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছি তাই আর কিছু বলতে বা লিখতে চাইলেও সম্ভব হচ্ছে না।
২. ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:২২
comment by: আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন: "আইনগতভাবে, নাজুক ও প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে থাকা একটি সরকার কিসের জোরে কাজ করে? তারা আসলে জোরে কাজ করে না। তারা কাজ করে, নিজেদের এক্সিট পয়েন্ট তৈরি করার কাজে। "
৩. ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:২২
comment by: মদনবাবু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে । ভেতেরর চিন্তাভাবনার অনেক জট খুলে গেলো বক্তব্য পড়ে ।
৪. ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১১:২১
comment by: এখনই সময় বলেছেন: শিক্ষকরা যদি নৈতিকতা কথা চিন্ত করে বলতে পারে "আমারা ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে আছি"

তা হলে নিরীহ জনগনের সম্পদ ভাংচুরের সময় কেন বললেন না " দয়া করে আপনারা নিরীহ জনগনের সম্পদ ভাংচুর করবেন না, আপনারা শান্তিপূর্ন আন্দোলন করেন"। এই কথাটা বললে কি অনৈতিক কাজ হত? নাকি দেশবাসীর জন্য ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াত? নাকি শিক্ষকদের চোখে জনগনের সম্পদ ভাংচুরের ব্যপারটা ধরা পরে নাই?

যারা সময়মত এত কিছু বুঝেন আবার সময় মত কিছুই বুঝেন না? বিচিত্র চরিত্র এই শিক্ষকদের।
৫. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১২:০২
comment by: মামু বলেছেন: এই শিক্ষক গুলা নৈতিকতার ভারসাম্য হারাইচিল, সুতারাং এই গুলাকে মাইর...
যাতে আগামীতে কেউ যেন এই রকম করার চিন্তা না করে...
৬. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ সকাল ৮:২১
comment by: উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ভাংচুর নয়, মৌন মিছিলে অংশ নেয়াটাকেই কিন্তু অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অন্তত আমি পত্রিকা পড়ে তাই বুঝতে পেরেছি।

আমি শিক্ষক রাজনীতির বিরোধী।

তবু এই রায়টিকে কেন যেন গ্রহন করতে পারছি না।
৭. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ সকাল ১০:৪৭
comment by: কাশফুল০৭ বলেছেন: এখনই সময় আর মামুকে বলছি, আপনারা কোনদিন এ রকম মারামারি বা ভাংচুরের সময় উপস্থিত থেকেছেন? যেখানে আদালত প্রমাণ করতে পারেনি, শিক্ষকরা শুধু মৌণমিছিল করার অপরাধে দন্ডিত হয়েছেন, সেখানে আপনারা কিভাবে এরকম উক্তি করেন? শিক্ষকরা সাধারণ ছাত্রদের পাশে মমতাবোধ থেকেই দাড়ায়, শুধু শিক্ষক কেন- একজন সাধারণ বিবেকবান মানুষমাত্রই তা করে।
৮. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ সকাল ১১:০৫
comment by: মাহবুব সুমন বলেছেন: বর্তমান সরকারের সাংবেধানিক বৈধতা নেই। আমার পড়া ও জানামতে এটাই। তবে আইনের ফাঁক বলে কথা আছে যেটা এ সরকার প্রয়োগ করছে আর এতে সায় দিচ্ছেন আমাদের সদা সুবিধাবাদী সুশিল সমাজ।
এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের ভুমিকা নেয়ার স্বাধীনতা ও ক্ষমতা আছে, তবে প্রশ্ন হলো সেটা প্রয়োগ করার বিবেক বা সত সাহস উচ্চ আদালতা রাখে কি না !!
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, আদতে তা রাস্ট্রের নির্বাহী বিভাগ হতে আলাদা হয়ে উচ্চ আদালতের অধীন হয়েছে, প্রভু পরিবর্তন হয়েছে তবে দাস পরিবর্তন হয়নি।
জরুরী অবস্থায় এ বিষয় নিয়ে কোনো নাগরিকের রিট পিটিশনে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেই উচ্চ আদালতের সুয়োমোটোই ভরসা (এবং দুরাশা )।
উচ্চ ও নিম্ন আদালতগুলোতে যেভাবে দলীয়করন,স্বজনপ্রীয়তা,নিম্ন মেধার চাটুকার আমদানী ইত্যাদি কারনে বিচার বিভাগ নিয়ে এ মুহুর্তে আশার কিছু দেখতে পাচ্ছি না। সাম্প্রতিক কালের কিছু রায় এ আশাকে আরো চাপিয়ে দিচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মামলাটাকে সাজানো রায় বলেই মনে হয়েছে আমার। বিচারবিভাগের স্বাধীনতার প্রতি প্রশ্নটুকু আরো দৃড় হয়ে যায় এ কারনে। রায় না পড়তে পারলেও পত্রিকা দেখে রায়টাকে সাজানোই বলে মনে হয়েছে।
এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমাচাওয়া শিক্ষকগনের ব্যপারে কি হয় সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি। সম্ভবত একই যাত্রায় দু ফল পাওয়া যাবে।
আর গনতন্ত্রের কথা আর কি বলবো। এটা এখন রাগবির বল আমাদের দেশে। হাতে , পায়ে দুভাবেই খেলা হচ্ছে।

৯. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:২৪
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: মাঠশালা, আবদুর রাজ্জাক শিপন, মদন বাবু
ধন্যবাদ।
১০. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩১
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: এখনই সময়,
আপনার কথাগুলো মজিদের দাড়ি কই মিয়া গোছের। শিক্ষকরা যদি বলতেন, আপনার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন তাইলে কি আপনার মতো মানুষ বলতেন, এইবার এদের ছেড়ে দেন? শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের হাপিত্যেশ আপাত দৃষ্টিতে ভালই লাগে বটে। কিন্তু আখেরে এইটা কুযুক্তি ছাড়া আর কিছু না।
১১. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৭
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: মামু,
নৈতিক ভারসাম্য সম্পর্কে আপনার ধারণা কী সেটা বড় জানতে ইচ্ছা করে। কাইন্ডলি আপনি কি বলতে পারেন নৈতিক ভারসাম্য কী জিনিশ?
উম্মু আবদুল্লাহ,
আইন প্রয়োগের যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে তাতে শুধু মৌন মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য কাউকে শন্তি দেয়া চলে না। কয়দিন আগেই তো শত শত মানুষ বায়তুল মোকারম থেকে সরব মিছিল করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আর শিক্ষকরা তো শুধু মৌন মিছিলই করেছে। এক দেশে আইনের দুই রকম প্রয়োগ কিভাবে সম্ভব?
আপনার মেনে না নেওয়া অনুভূতির জন্য ধন্যবাদ। গণতন্ত্রে আপনি কারও রাজনীতি করা পছন্দ করবেন আর কারওটা করবেন না। এটা হয় না।
১২. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৮
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: কাশফুল ০৭,
সবচেয়ে বড় কথা যেখানে প্রতি তিনমাস অন্তর রাজনৈতিক দল তৈরি হচ্ছে সেখানে মৌন মিছিল কিভাবে অপরাধ হয়?
১৩. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৪১
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: মাহবুব সুমন,
এই সরকার এখনও বৈধতা হারায়নি। কারণ তাদের বৈধতা কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি। যদি চ্যালেঞ্জ করার পর কোর্ট সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে তারপরও কোনো নির্বাচিত সংসদ যদি এই সরকারের কাজ অনুমোদন করে তবে সরকারটি বৈধ থাকবে। সে পর্যন্ত গিয়ে যদি তারা বৈধতা না পায় তবে একে অবৈধ বলা যাবে না। অন্তত আইনের দৃষ্টিতে।
১৪. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৫১
comment by: মাহবুব সুমন বলেছেন: মামো,
জরুরী অবস্থায় কোনো নাগরিকের পক্ষে সম্ভব নয় বৈধতে প্রশ্নে আদালতে যাওয়া।
উচ্চ আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে বৈধতা-অবৈধতা প্রশ্নে যেতে পারে যা বর্তমান পরিস্থিতিতে অসম্ভব বলে মনে করছি। উচ্চ আদালতের সাংবেধানিক ক্ষমতা আছে সংবিধানের ও সংসদে পাশ করা যেকোনো আইনের ব্যাপারে স্বীদ্ধান্ত নেবার।
আমি আইন ও সংবিধানের ফাঁকের কথা বলতে চাইছি, যে সুযোগ ব্যবহার করে বর্তমান সরকার কাজ করছে। হয়তো এ ফাঁকটিকেই বৈধতা দেবে ভবিষ্যত সংসদ।
সাংবাধানিক ভাবে বর্তমান যে ধরনের সরকার চলছে তার কোন অস্তিত্ব নেই।
এ ক্ষেত্রে অবৈধ প্রমানিত হওয়া সময়ের ব্যপার হলেও সাংবেধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকাতেই এটাকে অবৈধ বলছি।
১৫. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:০৭
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: সুমন,
আপনি দারুণ একটা প্রসঙ্গ তুলেছেন। রাষ্ট্রের খুঁটিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য থাকলে সুবিধা। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যদি নিজের এক্তিয়ারের ভেতরেই আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ প্রমাণ করতে যায় তবে ব্যাপারটা আখেরে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। পাকিস্তানে প্রথমে প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে বখাস্ত করেন। এবং বুঝতে পারেন সুপ্রিম কোর্ট তার আদেশ বরাদস্ত করবে না। পরে যখন সুপ্রিম কোর্ট মোশাররফকে অবৈধ ঘোষণার রায় দিতে উদ্যত তখন মোশররফ পেশীশক্তি ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটির পুরোটাই বাতিল করে দিলেন। রাষ্ট্র ক্ষমতার মূল উপাদান পেশী। এই সহজ সত্য না বুঝে আমরা আইনের শাসনের জন্য তড়পালে সেটা শেষ পর্যন্ত এই পরিণতি ডেকে আনে। ক্ষমতাসীনকে হটানোর বৈধ অধিকার জনগণের, সুপ্রিম কোর্টের নয়। ফলে শর্টকাট ওয়েতে ফল লাভের সম্ভাবনা থাকে না।
আমার মতে, এই ধরনের সরকার ক্ষমতায় থাকলে উচ্চতর আদলতগুলো হয় তাদের পুরোপুরি সমর্থন করে। নয়তো, রিট, আপিল, পাল্টা-রিট নিয়ে এক ইঁদুর বিড়াল দৌড় তৈরি করে সময় কাটায়। দ্বিতীয় অবস্থাটা প্রথম অবস্থার চেয়ে ভাল।
১৬. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:২০
comment by: মাহবুব সুমন বলেছেন: মামো,
আদালতের সাংবেধানিক ক্ষমতার কথা বলতে চেয়েছি। বাংলাদেশেও অতীতেও উচ্চ আদালত সংসদে পাশ করা সংবিধানের বৈধ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষনা করেছিলো যা এক প্রতিস্ঠানের অন্য প্রতিস্ঠানের মধ্যে যুদ্ধ বলতে আমি রাজি নই। মুলত আদালত সংবিধানের শুদ্ধতা প্রশ্নে কাজ করতে পারে।
তবে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় এর কোনো আভাস দেখতে পাচ্ছি না।
১৭. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:২২
comment by: উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: "কয়দিন আগেই তো শত শত মানুষ বায়তুল মোকারম থেকে সরব মিছিল করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আর শিক্ষকরা তো শুধু মৌন মিছিলই করেছে। এক দেশে আইনের দুই রকম প্রয়োগ কিভাবে সম্ভব?"
----------------------------------------

আমি তো এটাকে অস্বীকার করছি না। শুধু বায়তুল মোকাররম কেন, সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি মিছিল হল। কমপক্ষে ৩০ জনের মিছিল।

ভালো লেগেছে পত্র পত্রিকাসহ সবাই এর প্রতিবাদ করছেন। আমার দেশের উপসম্পাকদীয়টি অত্যন্ত চমতকার। সেখানে বিচার কার্যের দুর্বলতাটুকু তুলে ধরা হয়েছে। যেভাবে মানুষ এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে (পত্র পত্রিকার জরিপগুলো) তাতে একটা সুরাহার ব্যাপারে আশাবাদী।


১৮. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:০০
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: উম্মু আবদুল্লাহ,
আপনাকে অভিযুক্ত করছি না। ব্যাপারগুলো স্মরণ রাখা দরকার বলেছি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সুমন,
ঠিক কথা। সহমত।
১৯. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:০২
comment by: উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনাকও ধন্যবাদ। কোনো অহিংস আন্দোলনের জন্য কাউকে শাস্তি দেয়াটা গনতন্ত্রের বিরোধী।

২০. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:০৮
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম।
২১. ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:২১
comment by: ফাহমিদুল হক বলেছেন: মাহবুব, আপনার পোস্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে। মাহবুব সুমনের আলোচনাও বর্তমানের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব-বৈধতা নিয়ে সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করেছে। তবে এইসব অপেক্ষাকৃত জটিল বিষয় এই মুহূর্তে আমার মাথায় পুরোপুরি ঢুকছে না। আমি শুধু একটি বিষয় নিয়েই চিন্তিত, আমার প্রিয় চার শিক্ষক আদালতকর্তৃক কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।
২২. ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৫৯
comment by: মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: ফাহমিদ ভাই,
থ্যাংকস। আপাতত শিক্ষকদের মুক্তি চাওয়াটাই মূল কথা হওয়া দরকার। সবার আগে শিক্ষকদের মুক্তি চাই।
২৩. ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:২০
comment by: খারেজি বলেছেন:
ছাত্রগুলারে পানিতে ফালাইয়া দিয়েন না।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:০৯

লেখক বলেছেন: খারেজি,
আমরা পানিতে ফেলাইলে আপনি তুইলেন।

No comments:

Post a Comment