Monday, March 2, 2009

এম সি কলেজ বার্ষিকী 'পূর্বাশা' : হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের ফিরে আসা

৩১ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৫
শেয়ার করুন: [Add to digg] [Add to FURL] [Add to blinklist] [Add to reddit] [Add to Technorati] [Add to YahooMyWeb] [Add to Co.mments] [Add to NewsVine] Facebook [new feature]

কলেজ ম্যাগাজিন এখন প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য। দেশে বড় বড় কলেজ আছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন সেখানে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সাধারণভাবেই আশা করা যায়, এ বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষা কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে মুখরিত হবে কলেজগুলোর ক্যাম্পাস। ভবিষ্যতের জন্য তারা নিজেকে প্রস্তুত করবে। কিন্তু কয়েক দশক ধরে দলীয় রাজনীতির অনুসরণ ছাড়া শিক্ষার্থীদের আর কোনো কর্মকা-ের খবর তেমন একটা নজরে আসেনি। এখনো আসে না তেমন।
কলেজগুলোতে কলেজ সংসদের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে মাসিক ফি নেয়ার রীতি সেই আগের মতোই আছে। কিন্তু খুব কম কলেজেই সংসদ নির্বাচন হয় বা নির্বাচিত হলেও সংসদগুলো ঠিকঠাক মতো কাজকর্ম করে। অথচ যে গণতন্ত্রের জন্য আমাদের এতো হাহাকার তার প্রাথমিক চর্চাটা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতে পারতো এ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমেই। কলেজ সংসদ, কলেজ সংসদের কার্যকারিতা নেই বলেই হয়তো আগের মতো করে কলেজগুলো থেকে সাময়িকী বা বার্ষিক সাহিত্য আয়োজন আর দেখা যায় না।
শুধু কলেজ কেন দেশের বড় ইউনিভার্সিটিগুলো থেকেও আর শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো বড় বার্ষিকী বা সাময়িকীর আয়োজন দেখা যায় না। কারণ ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংসদগুলো বহু দিন ধরেই অকার্যকর। নির্বাচন নেই। সংসদ নেই। তাই কর্মকাণ্ডও নেই।
এ রকম একটি পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই কোনো কলেজের ঢাউস ও সমৃদ্ধ সাময়িকী হাতে এলে বেশ অবাক হতে হয়। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারীচাঁদ কলেজ অর্থাৎ এমসি কলেজ থেকে প্রকাশিত হয়েছে কলেজ বার্ষিকী পূর্বাশা। উদ্যোগ নিলেই যে হারানো একটি ঐতিহ্যকে নতুন করে ফিরে পাওয়া সম্ভব সেটাই প্রমাণিত হলো এ সাময়িকীতে।
উদ্যোক্তাদের অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের সমর্থন ছাড়া এ ধরনের সাময়িকী প্রকাশিত হওয়া অসম্ভব কাজ। পাশাপাশি মানসম্মত কাজের জন্য দরকার কাজের মানুষ। সুখের কথা, এ সাময়িকী সম্পাদনায় দুই বা ততোধিক শিক্ষক জড়িত ছিলেন যারা দেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিক ও কবি। নিজেদের লেখালেখির বাইরে তারা এমন একটি কাজের জন্য সময় ব্যয় করেছেন যা কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য বিপুল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
পূর্বাশা ম্যাগাজিনের একটি পর্ব সাজানো হয়েছে বিশেষ রচনা হিসেবে। এতে স্থান পেয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও নীহাররঞ্জন রায়ের লেখা দিয়ে। মজার ব্যাপার হলো, তিনটি লেখাই এমসি কলেজ কেন্দ্রিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমসি কলেজে এসেছিলেন। ছাত্রদের উদ্দেশে দেয়া তার বক্তৃতাটিই এতে সঙ্কলিত হয়েছে আকাঙ্ক্ষা শিরোনামে। নজরুলের কবিতা দুটিও সিলেট ও এমসি কলেজের সঙ্গে সম্পর্কিত। আর বাঙালির ইতিহাস বিষয়ক কোষ গ্রন্থ বাঙ্গালীর ইতিহাস-এর লেখক নীহাররঞ্জন রায় এ কলেজেরই ছাত্র ছিলেন। তার লেখার শিরোনাম সিলেটের জন্য মুরারীচাঁদ কলেজ যা করতে পারে। কলেজের শিক্ষার্থীরা যখন বড় সাহিত্যিকদের সঙ্গে তাদের শিক্ষাঙ্গনের এতো গভীর যোগাযোগের সূত্র খুজে পান তখন তাদের রোমাঞ্চ জাগাটাই স্বাভাবিক।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে বার্ষিকীর প্রবন্ধ বিভাগটি। প্রবন্ধ লিখেছেন মোঃ তাজিজুল ইসলাম, প্রশান্ত মৃধা, জফির সেতু, নন্দলাল শর্মা। এমনকি ইংরেজি ভাষায় লেখা বেশ কিছু প্রবন্ধ ও কবিতাও স্থান পেয়েছে সঙ্কলনটিতে। নিবন্ধ জাতীয় কিছু লেখাও প্রকাশিত হয়েছে এতে। স্থান পেয়েছে শিক্ষার্থীদের লেখা একগুচ্ছ কবিতা ও ছড়া এবং কয়েকটি ছোটগল্প। শিক্ষার্থীদের অনেক গল্প, ছড়া ও কবিতায় প্রাথমিক চর্চার ছাপ রয়ে গেছে। কিন্তু তাদের এ আত্মপ্রকাশের সময়ে তারা কলেজ ম্যাগাজিন থেকে যে পৃষ্ঠপোষকতা পেলেন তা নিশ্চয় ভবিষ্যতে তাদের লেখার জন্য একটি স্মৃতিময় ঘটনা হয়ে থাকবে।
ম্যাগাজিনটির বাড়তি আকর্ষণ দুর্লভ কিছু আলোকচিত্রের সঙ্গে বর্তমানের কিছু ছবি। সুন্দর ছাপা ও নিখুত বাধাইয়ের সঙ্কলনটি রীতিমতো সংগ্রহে রাখার মতো।
এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বার্ষিকী সম্পাদনা পরিষদকে ধন্যবাদ জানাই এ সুন্দর উদ্যোগের জন্য। আবার লুপ্তপ্রায় কলেজ ম্যাগাজিনের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এটা বাড়তি পাওনা। দেশের অন্য কলেজগুলো বিশেষ করে বড় কলেজগুলো পূর্বাশাকে অনুসরণ করে নিজেদের বার্ষিকী প্রকাশ করতে পারলে সেটা আমাদের জন্য বাড়তি আশার কারণ হবে।

আজকের যায়যায়দিনে প্রকাশিত।



প্রকাশ করা হয়েছে: ডায়েরি বিভাগে ।



* ২১ টি মন্তব্য
* ২৭৯ বার পঠিত,

Send to your friend Print
রেটিং দিতে লগ ইন করুন
পোস্টটি ৮ জনের ভাল লেগেছে, ১ জনের ভাল লাগেনি


এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন

আপনার নিজস্ব ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন

আপনার নাম :

আপনার ই-মেইল

আপনার বন্ধুদের ইমেইল

মেসেজ (নীচের মেসেজটি আপনার ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন
hi, i have been reading a nice wonderful post in http://www.somewhereinblog.net and would like to share it with you. Here is the post link http://www.somewhereinblog.net/blog/mahbubmoreblog/28765827 , please visit the link and rate it if you like. :-)

নিজেকেও একটি কপি পাঠান



১. ৩১ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১১:১৫
comment by: দস্যু বনহুর বলেছেন:
ভাল লাগল শুনে। অনেকদিন যাবৎ বন্ধ ছিল।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:৫৭

লেখক বলেছেন: হ।
২. ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১২:৫৮
comment by: ফারহান দাউদ বলেছেন: স্কুলগুলিতে এখনো ম্যাগাজিন বের হয় প্রতি বছরই,অন্তত বড় স্কুলগুলিতে এখনো হয়,কিন্তু কলেজে বড়জোর নাম-ঠিকানা সহ স্যুভেনির পর্যন্তই। সেখানে এই উদ্যোগ ব্যতিক্রমই বলতে হবে।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:৫৯

লেখক বলেছেন: হ্যাঁ।
৩. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:৫৮
comment by: আসল-ট্র্যাপ বলেছেন: +

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:০২

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
৪. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:০৫
comment by: আসল-ট্র্যাপ বলেছেন: দেখুন
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:২৭

লেখক বলেছেন: দেখছি। আইডিয়াটা ভাল।
৫. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:০৬
comment by: মাহমুদ মামূন বলেছেন: মাহবুব ভাই,
"সমাজতান্ত্রিক ফোরাম" গ্রুপের জন্য একটা লেখা দাবি করছি।

না করবেন না প্লিজ।

আর হ্যা এই লেখার জন্য +++
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:২৯

লেখক বলেছেন: sure.
৬. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:০৬
comment by: আসল-ট্র্যাপ বলেছেন: কিছু জারজের যোচ্চুরি দেখুন ঐ পোষ্টে
৭. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:২৬
comment by: সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেছেন: +
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৩০

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
৮. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:৫২
comment by: আরিফ জেবতিক বলেছেন: শুনে খুব ভালো লাগল । আমি জানি না ঠিক কিভাবে এই ম্যাগাজিনটি বের হল । এম.সি কলেজে কিছু করতে পারা একটা বিরাট সফলতা ছাড়া কিছু নয় এখন । একটি কপির জন্য লোভ হচ্ছে , কিন্তু কোথায় পাওয়া যাবে সেটা জানি না ।

পূর্বাশার গত সংখ্যাটি বোধহয় ৯১ সালে বের হয় । সেই সংখ্যায় আমার একটি গল্প ছিল । আঙুলে গুনে দেখলাম ....১৭ বছর!

স্মৃতিকাতর হলাম ।
হায় , জীবন এতো ছোট কেনে !
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:১৬

লেখক বলেছেন: আমার কাছে এক কপিই আছে।
আপনি এমসি কলেজের ছাত্র জেনে খুব ভাল লাগলো।
প্রশান্ত মৃধা ও জফির সেতু ওখানে পড়ান এখন। ওদের মাধ্যমেই ম্যাগাজিনটা আমি পেয়েছি।
৯. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:৫৩
comment by: সাতিয়া মুনতাহা নিশা বলেছেন: হুমমম।পড়ছিলাম যাযাদি'তে।ভালো লেগেছে লেখাটি।+
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:০৭

লেখক বলেছেন: থ্যাংকস।
১০. ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:১০
comment by: মুক্তাদীর আহমদ বলেছেন: এম সি কলেজের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আপনাকে শুভেচ্ছা।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:০৭

লেখক বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা।
১১. ১২ ই এপ্রিল, ২০০৮ সকাল ১০:৩৭
comment by: আলী ওয়ািসকুজ্জামান বলেছেন: এম সি কলেজের ম্যাগাজিন বেরিয়েছে সুনে খুব ভালো লাগলো। আশা হারানোর মতো কিছু নেই, পৃথিবিতে এখনো ভালো কাজ হয়। আপনাকে শুভেচ্ছা।
১২ ই এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ১২:১৩

লেখক বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা।

No comments:

Post a Comment